চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি। শুক্রবার (৬ জুন) রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সভা থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
পরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতভাবে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে যে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া তার বক্তব্য প্রসঙ্গকে অতিক্রম করে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পরিণত হয়েছে। এই দীর্ঘ ভাষণে তিনি বন্দর, করিডর ইত্যাদি এমন সব বিষয়ে অবতারণা করেছেন যা তারই ভাষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩টি ‘ম্যান্ডেটের’ মধ্যে পড়ে না। ভাষণে তিনি শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করায় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, সভায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে সময়সীমা প্রস্তাব করেছেন তা পর্যালোচনা করে সভা মনে করে যে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অধিকন্তু কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ তার ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গুম, খুন, জেল-জুলুম, আহত ও নির্যাতিত হয়েও অব্যাহত লড়াই চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে তার বিজয় অর্জিত হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্বে জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে বিধায় এ সভা রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করছে।
এতে আরও বলা হয়, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সংগতভাবেই শঙ্কিত হতে পারে বলে সভা মনে করে।
খুলনা গেজেট/এইচ